বৃষ্টির অজুহাতে বাজারে অস্থিরতা, কাঁচামরিচ কেজিতে ৪০০ টাকা - দিগন্ত জার্নাল

বৃষ্টির অজুহাতে বাজারে অস্থিরতা, কাঁচামরিচ কেজিতে ৪০০ টাকা

নিত্যপণ্যের বাজার, কাঁচামরিচের দাম, বৃষ্টি, বাজার অস্থিরতা, সবজির দাম বৃদ্ধি, ভোক্তা দুর্ভোগ, ক্যাব, বাজার কারসাজি, মুরগির দাম, রাজধানীর বাজার

দিগন্ত জার্নাল ডেস্ক:

শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫ |বৃষ্টিকে অজুহাত করে ফের অস্থির হয়ে উঠেছে নিত্যপণ্যের বাজার। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কাঁচামরিচ, সবজি ও মুরগির দামে বড় ধরনের উল্লম্ফন দেখা দিয়েছে। সরবরাহ কমার অজুহাতে এক লাফে দ্বিগুণ বাড়ানো হয়েছে কাঁচামরিচের দাম। খুচরা বাজারে প্রতিকেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ২০০ টাকার নিচে। একই সঙ্গে সবজি, মাছ ও মাংসের দামও বেড়েছে হু হু করে।

শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজারে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায়, নয়াবাজারে ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকায় এবং মালিবাগ কাঁচাবাজারে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকায়। ক্রেতারা বলছেন, বাজারে সরবরাহে ঘাটতি নেই, তবুও অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়ানো হচ্ছে। মালিবাগের ক্রেতা মো. সোলাইমান অভিযোগ করেন, “বৃষ্টি হলেই বিক্রেতারা এমন অজুহাত দেখায়। কিন্তু বাজারে মরিচের কোনো সংকট নেই।”

অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছেন, আড়ত থেকে বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে বলে খুচরায়ও বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। বিক্রেতা মো. শাহ আলম জানান, “আড়তে সরবরাহ কম, দামও বেড়েছে। তাই আমরাও বেশি দামে বিক্রি করছি।”

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন বলেন, “বৃষ্টিতে কৃষি খেত নষ্ট হলে দাম কিছুটা বাড়তে পারে, তবে এক লাফে কাঁচামরিচের দাম দ্বিগুণ হওয়া বাজার কারসাজি ছাড়া কিছু নয়। সরকারকে বাজার তদারকি জোরদার করতে হবে।”

সবজির বাজারেও একই চিত্র। রাজধানীর খুচরা বাজারে ঢ্যাঁড়স বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৭০-৮০ টাকায়, কচুরলতি ৮০ টাকা, গোল বেগুন ১০০ টাকা, বরবটি ১১০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮৫ টাকা, ঝিঙ্গা ও দুন্দুল ৮৫ টাকা, পটোল ৭৫ টাকা, শসা ৮০ টাকা, করলা ১০০ টাকা এবং শিম ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১০-১৫ টাকা।

মাংস ও মাছের বাজারেও আগুন। বয়লার মুরগির কেজি ১৯০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩০০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৬০০-৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৭৮০-৮০০ টাকায় এবং খাসির মাংস ১১০০-১২০০ টাকায়। ইলিশের দামও হাতছোঁয়া বাইরে; মাঝারি আকারের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২৩০০-২৫০০ টাকায়, আর ছোট ইলিশ ৭০০-৭৫০ টাকায়।

বরিশালেও একই পরিস্থিতি। এক সপ্তাহে সবজির দাম দ্বিগুণ হয়েছে। কাঁচামরিচের দাম বেড়ে কেজিপ্রতি ৪০০ টাকায় উঠেছে, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৪০ টাকা। বরিশালের বহুমুখী মার্কেট, বড়বাজার, পোর্ট রোড, বটতলা, সাগরদী ও চৌমাথা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, করলা ১০০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, বেগুন ৯০ টাকা, পটোল ৭০ টাকা, টমেটো ১৬০ টাকা, লাউ ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারে এই দাম আরও কিছুটা কম হলেও খুচরায় সবজিগুলো ২৫-৩৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা দাবি করছেন, বৃষ্টিপাত, মৌসুমি বায়ুর প্রভাব এবং পূজার ছুটিতে সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ থাকায় সরবরাহ কমে গেছে। তবে তারা আশা করছেন, পূজার ছুটি শেষে বর্ডার খুললে সরবরাহ স্বাভাবিক হবে এবং দাম কিছুটা কমে আসবে।

an adbox will go here