নোটিশ ছিঁড়ে প্রতিবাদ জানালেন খতিব নাজমুল হাসান কাসেমী
ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করে জামায়াতের পক্ষ থেকে দেওয়া নোটিশ ছিঁড়ে ফেলে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানন উত্তরার খতিব নাজমুল হাসান কাসেমী। রোজা ও পূজার প্রসঙ্গ তুলে ধর্মীয় বক্তব্য দেওয়ায় ঢাকার উত্তরার এক মসজিদের খতিবের বিরুদ্ধে নোটিশ পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে জামায়াতে ইসলামীর কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় উত্তেজনা ও আলোচনা ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ঘটনাটি ঘটে গত ১০ অক্টোবর ২০২৫, ঢাকা উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টরের খালপাড় বাইতুন নুর জামে মসজিদে।
বাইতুন নুর জামে মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী তার জুমার খুতবায় বলেন, “রোজা ও পূজা এক নয়, মুসলমানদের উচিত সংযত থাকা।” এর আগে জামায়াতে ইসলামী নেতা এডভোকেট শিশির মনির এক পূজা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে রোজা ও পূজা নিয়ে বলেন, ” আমরা একই মুদ্রার এ পিঠ এবং ও পিঠ। এ পিঠে আছে শাপলা, ও পিঠে আছে আনারস। আমরা একই মুদ্রার এ পার এবং ও পার। একদিকে রোজা, আরেকদিকে পূজা। এই রোজা আর পূজা মিলে বাংলাদেশ।”
তার এই মন্তব্য এদেশের আপামর মুসলিম জনসাধারণের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে। যা মুসলমানদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে খতিব হাফেজ, মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমীর ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করে উত্তরা এলাকার জামায়াত নেতারা তার বিরুদ্ধে একটি নোটিশ প্রেরণ করেন ।
অভিযোগ রয়েছে, ওই নোটিশের অনুলিপি স্থানীয় থানা থেকে শুরু করে সামরিক কর্মকর্তাদের কাছেও পৌঁছানো হয়। পরবর্তী জুমায় খতিব নাজমুল হাসান কাসেমী মুসল্লিদের সামনে বলেন, “আমি আগেও বলেছি, এখনো বলছি—রোজা আর পূজা এক নয়, আপনারা সংযত হোন।” এ সময় সমজিদে অবস্থানরত মুসল্লিরা উক্ত নোটিশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন।
এরপর খতিব নাজমুল হাসান তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদস্বরূপ মসজিদ-ভরা জুমার মুসল্লিদের সামনে নোটিশটি ছিঁড়ে ফেলেন। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার ঝড় তোলে, অনেকই খতিবের সাহসীকতার প্রশংসা করেন । ধর্মীয় বক্তা এনায়েতুল্লাহ আব্বাসি তার ফেসবুক পোস্টে জামায়েতের এমন আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি নাজমুল হাসান কাসেমী সাহসিকতার প্রশংসা করেন জামায়াতের প্রেরিত নোটিশ ছিঁড়ে ফেলার জন্য কাসেমীকে সাধুবাদ জানিয়ে তিনি আরো লিখেন , “রোজা ও পূজাকে এক বলা শিরক ও কুফরের কাছাকাছি অবস্থান। তাই খতিব সাহেব নোটিশ ছিঁড়ে ফেলে সঠিক কাজ করেছেন।”

তিনি আরও বলেন, “জামায়াতের পক্ষ থেকে এমন নোটিশ পাঠানো ধর্মীয় স্বাধীনতার পরিপন্থী এবং এটি যেন এক নতুন স্বৈরাচারের রূপ।” ঘটনা নিয়ে স্থানীয় মুসল্লিরা বলেন, খতিব নাজমুল হাসান কাসেমী সবসময় ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে খুতবা প্রদান করে থাকেন এবং ধর্মীয় বিষয়ে তার বক্তব্য বিকৃতি না ঘটানোই উচিত।